নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করা হবে আজ রোববার অথবা আগামী সোমবার। সার্টিফায়েড কপি অথবা বিচারের সত্যায়িত কপি আজ রোববারই সংগ্রহের চেষ্টা করবেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এই কপি রোববার হাতে পেলে সেদিনই জামিন আবেদন করবেন। জামিন মন্থর হলেও বেগম খালেদা জিয়া আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়-শঙ্কা রয়েই গেছে। বাদি ও রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী জানান, নিম্ন আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার নিষ্পত্তির পর দুর্নীতির দ্বিতীয় মামলাও রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষ কি মার্চের প্রথম দিকেই এই মামলার রায় হয়ে যাবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মনে করন এই মামলার প্রামাণ্য দলিল, সাক্ষ্য প্রমাণ অনেক বেশি শক্তিশালী। এই মামলায় কমপক্ষে দশ বছরের দ- প্রত্যাশা করছেন তারা। অরফেনেজ ট্রাস্ট মামলায়
জামিন পেলেও কদিনের মধ্যেই চেরিট্যাবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হবে। দুই মামলায়ই বেগম খালেদা জিয়া জামিন যদিও পান সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেনই এমন নিশ্চয়তা নেই।
বিএনপির আইনজীবী নেতারা এবং সাধারণ নেতা-কর্মীরাও আস্থাশীল যে বেগম খালেদা জিয়া আইনগতভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতে দ-িত ব্যক্তির উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়ার নজির রয়েছে। উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন অনিষ্পন্ন থাকার পরও নির্বাচনে অংশ নেয়ার এবং সংসদ সদস্যপদ ও মন্ত্রীত্বে বহাল থাকার অধিকার আইনসম্মতভাবেই প্রদান করা হয়। আবার এর উল্টো নজিরও উচ্চ আদালতেই রয়েছে। নিম্ন আদালতে দন্ডিত ব্যক্তির উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন না মর্মে রায় রয়েছে। এমনি অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা কি দাঁড়াবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে আপিল নিষ্পত্তির আবেদন করবেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। দুই স্তরে এই আপিল দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করবে সংক্ষুব্ধ পক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষও চাইবেন আপিল নিষ্পত্তির। বিএনপির নেতৃবৃন্দ মনে করেন তফসিল ঘোষণার অন্তত দু’মাস আগে আপিল নিষ্পত্তি এবং তাতে ইতিবাচক ফল না এলে তাদের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়া হবে অনেক বেশি জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। হাইকোর্ট এবং পরবর্তী ধাপে আপিল বিভাগে আপিল নিষ্পত্তি সময় সাপেক্ষ হলে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এ নিয়ে পৃথক রীট করার কথাও ভেবে রেখেছেন। দ-িত ব্যক্তির নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্যতা, অযোগ্যতা নিয়ে উচ্চতর আদালতের দুটি ভিন্নধর্মী রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্যতা দাবি করা হবে।
আদালতের সিদ্ধান্তের উপরও নির্ভর করছে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভাগ্য। খালেদা জিয়া শেষ পর্যন্ত আইনগতভাবে সে অধিকার বঞ্চিত থাকলে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। যদিও এ ব্যাপারে দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ে মতভিন্নতা রয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পরবর্তী পর্যায়ে।
দ-িত হওয়ার পর খালেদার জনপ্রিয়তা, তাঁর প্রতি মানুষের সহানুভূতি বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে। খালেদাকে জেলে রেখে নির্বাচনে গেলেও ফলাফল অনেক ভাল হবে বলেই সিনিয়র অনেক নেতা মনে করেন।