চলতি বছরে হজ প্যাকেজের খরচ কমলো
ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, হজে যেতে সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঘোষিত সাধারণ প্যাকেজ অনুযায়ী, হজের খরচ সরকারিভাবে ১ লাখ ৪ হাজার ১৭৮ টাকা এবং বেসরকারিভাবে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা কমানো হয়েছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এদেশের হজযাত্রীরা যাতে একেবারেই যৌক্তিক খরচে হজব্রত পালন করতে পারে সে বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি। এছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে দাপ্তরিক যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো আরও কিভাবে সহজ করা যায়, কিভাবে হজযাত্রীদের আরেকটু বেশি কমফোর্ট দেওয়া যায়, সে বিষয়েও আমরা কাজ করছি। সরকার হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা দিতে বদ্ধপরিকর।
ধর্মমন্ত্রী বলেন,
টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির পরও আমরা গত বছরের তুলনায় এবছর সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ কমানো হয়েছে। আমরা আগামী বছর হজ ব্যবস্থাপনায় আরও অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারব, ইনশাল্লাহ।
ধর্মমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত; এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের জন্য হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। আমরা অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যায়।
তিনি বলেন, এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। কারণ, হজের জন্য বেশ বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন হয়। তাছাড়া, হজ জীবনে একবারই ফরজ। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্যই প্রিয় নবী জনাবে রসুল হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।
মো. ফরিদুল হক খান বলেন,
হজ হলো মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের মহাসম্মেলন। হজ একদিকে ফরজ ইবাদত, অন্যদিকে এই ইবাদতের সঙ্গে মুসলমানদের বিশেষ আবেগ ও অনুভূতির মিশ্রণ রয়েছে। বিশেষ করে হজের সাথে বায়তুল্লাহ বা কাবা শরীফের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সৌদি আরব পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, রহমাতাল্লিল আলামীন হযরত মুহাম্মদ (স.) জন্মভূমি এবং এখানে তাঁর রওজা মুবারক রয়েছে। মসজিদে নববী রয়েছে এবং রয়েছে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘটনাবহুল ও স্মৃতি বিজড়িত নানা স্থান ও স্থাপনা।
হজ যাত্রীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহি-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আপনাদের প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করা হয়েছে। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা-সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন, ইনশাল্লাহ।
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, Training is the best Welfare। প্রশিক্ষণটা যত ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারবেন, আপনাদের দক্ষতা ততবেশি শানিত হবে, আত্মবিশ্বাস ততটাই বৃদ্ধি পাবে। জীবনের প্রতিটিক্ষেত্রেই সফলতা ও উৎকর্ষতার প্রধান হাতিয়ার হলো প্রশিক্ষণ। কোন কিছু না বুঝলে প্রশিক্ষক যারা থাকবেন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন। যতবেশি প্রশ্ন করতে পারবেন ততবেশি শিখতে ও জানতে পারবেন। নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন।
ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব (হজ) মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব মো. নায়েব আলী মন্ডল, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক, ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।
১২ মিনিট আগে