রক্ষণাত্মক খেলা ছাড়া সিটিকে হারানোর উপায় দেখছিলেন না আনচেলত্তি
ইউরোপের ক্লাবগুলোর এলিট প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বকালের সেরা দল যে রিয়াল মাদ্রিদ সে ব্যাপারে কারও খুব বেশি সন্দেহ থাকার কথা নয়। আসরটির সর্বোচ্চ ১৪ বারের শিরোপাজয়ী দলকে থামাতে পারে এমন দল খুব কমই আছে। তবে বুধবারের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে শুরু থেকেই স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ফুটবল থেকে সরে এসে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক খেলতে থাকে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। ম্যাচ শেষে রিয়ালের ইতালিয়ান কোচ জানালেন এর কারণ।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে রিয়ালের সামনে পড়ার আগে নিজেদের ঘরের মাঠে কখনোই হারেনি গত মৌসুমের ট্রেবল জয়ী দল ম্যানচেস্টার সিটি। ঘরের মাঠে ইতিহাদকে একপ্রকার দুর্গই বানিয়ে রেখেছিল সিটিজেনরা। ৫৩ হাজার দর্শকের এই দুর্গে অন্যদিকে কোনো জয় নেই রিয়ালের। তবে এই দুর্গ ঠিকই জয় করেছে কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে পুরো ম্যাচজুড়ে লো-ব্লক করে খেলা রিয়াল মাদ্রিদকে অনেকেই চিনতে পারেনি। ম্যাচ শেষে চারবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী এই কোচ জানালেন এর কারণ। তার মতে রিয়ালের ইতিহাদ থেকে বিজয়ী হয়ে ফেরার একটিই পথ খোলা ছিল। তিনি সেই পথটিই বেছে নিয়েছেন এবং সেটি তাকে সাফল্যও এনে দিয়েছে।
আনচেলত্তি ম্যাচ শেষে সম্প্রচার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা ভালো শুরু করেছিলাম। রদ্রিগোর গোল আমাদের এগিয়েও দিয়েছিল তবে তারপর আমাদের ডিফেন্ড করতে হয়েছে। পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য যা করতে হয়েছে তা আমরা করেছি।’
আনচেলত্তি আরও বলেন ‘আমরা আসলে অন্যভাবে খেলার কথাও ভেবেছিলাম, কিন্তু যখন আমরা এগিয়ে গেলাম, আমরা ডিফেন্সিভ লাইনটাকে অনেক কমিয়ে এনেছিলাম এবং এতে ম্যাচে সিটির নিয়ন্ত্রণ বেশি চলে আসে। তবে ওটা নতুন কিছু নয়।’
সিটির শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করে আনচেলত্তি বলেন ‘আসলে এখান থেকে (ইতিহাদ) বেঁচে ফেরার একটা পথই খোলা ছিল। তা হলো- সুযোগ পেলে তা কাজে লাগানো, আমরা সুযোগটা শুরুতেই নিতে পেরেছিলাম, এরপর খুবই ভালো রক্ষণ সামলেছি। ম্যানসিটির বিপক্ষে এটা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
তার কথার সত্যতা পাওয়া যায় ম্যাচের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে। ১২০ মিনিটের খেলায় পুরো সময়জুড়ে ম্যানচেস্টার সিটি কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে। ৬৭ শতাংশ সময় বল তাদের দখলে ছিল। পুরো ম্যাচে রিয়াল শট নিয়েছে ৮টি বিপরীতে সিটির শট ৩৩টি। কর্ণারেও ছিল তাদের একচেটিয়া সাফল্য। তাদের ১৮টি কর্নারের বিপরীতে রিয়ালের কর্নার একটি।
তবে এতসব আক্রমণ থামিয়ে দিয়েছে রিয়ালের যে রক্ষণ তার প্রশংসা করতে ভুললেন না তিনি। খেলোয়াড়দের এই সবটা বিলিয়ে দেওয়ার মনোভাবে সন্তুষ্ট রিয়াল কোচ আনচেলত্তি, ‘আমি অনেকবার রিয়াল মাদ্রিদের এই অসাধারণ মনোভাবের সাক্ষী হয়েছি। এই দলটাই এমন কিছু করে দেখিয়েছে যা ভাবনাতেই ছিল না। টাইব্রেকার নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। লুনিনের জন্য এটা অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা।’